বুধবার, ১৫ জুন, ২০১৬

রাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস মুক্তচিন্তার অনেক লেখক বিদেশে

সম্পাদক নোট: ব্লগার সাংবাদিক সাকিব আহমদ মুছার ‘রাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস মুক্তচিন্তার অনেক  বাংলাদেশি লেখক বিদেশে’ প্রবন্ধটি তার নিজ ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশ করা হলো।

বাংলাদেশের অনেক লেখক এবং ব্লগার ইতিমধ্যে পশ্চিম ইউরোপে বা কানাডা ইত্যাদি দেশে চলে আসছেন। এখান থেকে তারা নূতন উদ্যমে লিখবেন, ইতিমধ্যে শিখতে শুরুও করেছেন অনেকে। বিশেষত আজকের দিনে একটি অনলাইন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় হয়েছে ̶ সেটি হচ্ছে ফেইসবুক। এখন জিহাদী খুনীরা ফেসবুককে আক্রমণ বা খুন করবে কীভাবে? বরং এদের সহিংস কর্মকাণ্ড বিদেশে অবস্থানকারী ধর্মে অবিশ্বাসী লেখক ও চিন্তকদেরকে আরও আক্রমণাত্মক করে তুলছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ইসলাম ও মুহাম্মদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে যে সব লেখক ছদ্মনামে এবং স্বনামেও লিখতে শুরু করেছে তাদেরকে তারা আক্রমণ ও হত্যা করবে কীভাবে? অন্যদিকে, ধরা যাক বাংলাদেশ সরকার এবং রাষ্ট্র ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে ৫৭ ধারায় তাদেরকে পাকড়াও করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল। তখন কী হবে? সরকার এবং রাষ্ট্র নিজেই কি নিজেকে তামাশার সামগ্রী করবে না? নাকি সরকার বাংলাদেশকে পৃথিবীর একমাত্র ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করবে?

বস্তুত জিহাদীদের সাম্প্রতিক হত্যা ও হামলা এবং একই সঙ্গে এগুলির সমান্তরালে সরকার ও রাষ্ট্রের প্রায়শ নিষ্ক্রিয় এবং এমনকি অনেক সময় এগুলির প্রতি প্রশ্রয়মূলক এবং লেখকদের বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানীমূলক ভূমিকা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি যে অবিশ্বাস, সন্দেহ ও অনাস্থার জন্ম দিয়েছে তার ফলে ইতিমধ্যে অনেক মুক্তচিন্তার লেখক বিদেশে চলে আসছেন। আরও অনেকে যাবার চেষ্টা করছেন। এখন বিদেশে গিয়ে এদের লেখনী বন্ধ করার দায়িত্বটা কোন্‌ জিহাদী বা কোন্‌ সরকার নিবে? এটা এখন স্পষ্ট যে, বিদেশে গিয়ে এইসব লেখক নিজেদেরকে একটু গুছিয়ে অনেক বেশী সংগঠিত ও আক্রমণাত্মকভাবে ধর্ম বিশেষত ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝা যাবে যে, কিছুদিন যাবৎ এই আক্রমণের তীব্রতা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্তত ইন্টারনেটের জগতে সকল অলোকবাদী ধর্ম এবং বিশেষ করে ইসলামের বিরুদ্ধে একটা আসন্ন প্রলয়ঙ্কর সুনামির জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত বাঙ্গালী পাঠকরা এখন থেকে নিজেদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে এই লেখক এবং ব্লগাররা চাকুরী বা উন্নত জীবন ও জীবিকার সন্ধানে পাশ্চাত্যে যাচ্ছেন না। বরং এরা যাচ্ছেন নিজেদের বিশ্বাসকে রক্ষা করে বাঁচবার জন্য। এদের এই যাওয়াটা অন্যদের যাওয়া থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ফলে এরা যেমন একই সঙ্গে ধর্মের বিরুদ্ধে সমালোচনায় আরও নির্ভয়, নিষ্করুণ এবং আক্রমণাত্মক হবেন তেমন যে সরকার ও রাষ্ট্র তাদের রক্ষা করা দূরে থাক বরং তাদের সঙ্গে রীতিমত তামাশা করেছে এবং তাদের উপর বিভিন্নভাবে চাপ দিয়েছে সেই সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতিও তারা বিরূপ হবে। প্রথমত তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধ হবে। এটা হবে আওয়ামী লীগের জন্য একটা ক্ষতি। কারণ এদের অধিকাংশ রাজনীতি নিয়ে মাথা না ঘামালেও তাদের অনেকের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন ছিল স্পষ্ট। বিশেষত বিএনপি-জামাতের বিপরীতে মন্দের ভাল হিসাবে তারা অনেকেই আওয়ামী লীগকে বিবেচনা করত। এই জায়গা আওয়ামী লীগ সরকার ধ্বংস করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন